একজন প্রযুক্তি প্রেমী সুখী মানুষের কল্পকাহিনীঃ খন্ড-৩
ইতোমধ্যেই দাদার PLC ফার্মটিও বেশ নাম করে ফেলেছে। বেশ কিছু নতুন ধরণের স্বয়ংক্রিয় মেশিন দাদার হাত ধরে তৈরি হয়েছে। তাই রোবটিক্সকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য প্রাথমিক প্রস্তুতিটুকু ইতোমধ্যেই যে সম্পূর্ণ হয়েছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। দাদার মত ব্যাক্তিদের পক্ষেই রোবটিক্স নিয়ে চিন্তা করাটা সম্ভব। আমিও বিষয়টিতে উৎসাহী হয়ে উঠলাম। আমরা রোবটিক্স শিল্পকে প্রতিষ্ঠিা করার ক্ষেত্রে প্রাথমিক সমস্যা গুলো চিহ্নিত করলাম। যার মধ্যে উল্লেখ যোগ্য ছিল VLSI ডিজাইন এবং ফেব্রিকেশন। আমাদের দেশে ইন্ট্রিগেটেড চিপ তথা IC তৈরি করার মত কোন প্রতিষ্ঠান নেই। আবার অন্যদেশ থেকে আমদানি করলে, স্থানিয় মার্কেটে আংশিক সফল হতে পারলেও আন্তর্জাতিক পর্যয়ে পৌছানো যাবে না। এ ধরণের আরো বেশ কিছু বিষয়ে আমরা কথা বললাম। দাদার সাথে একটা ভাল দিন অতিবাহিত করে বিকেলে রুমে ফিরে এলাম।
………………………………………………………………………..
সামনে সেমিস্টার ফাইনাল। একটু লেখাপড়া করা দরকার। তাই ক্লাস, লেখাপড়া নোট লেখা, লাইব্রেরিতে দৌড়াদৌড়ি এসবের মধ্যে ব্যস্ত হয়ে পরলাম। কিন্তু সবকিছুর মধ্যেই যেন রোবটিক্স বিষয়টি বারবার চলে আসছে। সে ক্লস হোক, লাইব্রেরি হোক আর পড়ার টেবিলই হোক। ক্লাসের ফাঁকে ফাঁকে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেয়ার সময় বিষয়টি নিয়ে আলোচনায় মেতে উঠলাম। অনেকেই আমাকে নিয়ে হাসাহাসি করল। কেউ কেউ তো বলেই বসল “ মাথা থেকে রোবটিক্সের ভুতটাকে সরিয়ে সেমিস্টার ফাইনাল নিয়ে চিন্তা কর”।
নিজের কাছে খুব খারাপ লাগল, যা হোক কি আর করা। রুমে ফিরে ফ্রেস হয়ে বইয়ের পাতায় চোঁখ গুজলাম। হঠাৎ ফোনটা বেজে উঠল, দেখি আমার এক বন্ধু ফোন করে Sorry বলছে। বুঝলাম আমার বন্ধুদের মধ্যে অনেকেই বিষয়টিতে আগ্রহী, যাস্ট মজা করার জন্য তরা কথা গুলো বলেছিল।
সেমিস্টার ফাইনাল শেষ, ক্লাস শুরু হতে বেশ কয়েকদিন বাঁকী। মনে হল সময় এসছে রোবটিক্স নিয়ে চিন্তা করার। বন্ধুদের সাথে কথা বলে পাঁচ জনের একটা টিম তৈরি করলাম। অল্প কয়েক দিনের মধ্যেই সবাই পরিকল্পনা অনুযায়ী বেশ ভাল কাজ করেছে। এরই মাঝে হঠাৎ মার্টিন দার ফোন।
“কি ব্যাপার, অনেক দিন হল তোমার কোন খবর পাচ্ছি না”;
“দাদা আসলে সেমিস্টার ফাইনাল নিয়ে একটু ব্যাস্ত ছিলাম”
দাদাকে আমাদের টিমের কথা বললাম, দাদা খুব খুশি হলেন। সবাইকে নিয়ে একদিন দেখা করার কথা বললেন।
সবাই মিলে একদিন দাদার অফিসে চলে গেলাম। দাদা বলছিলেন…..
“তোমাদের পরিকল্পনা এবং অগ্রগতি দেখে বেশ ভাল লাগছে। মনে হয় আমাদের কাজ শুরু করার সময় এসে গেছে। জাপানে আমার এক বন্ধুর সাথে কথা হয়েছে। তিনি নিজেই একজন VLSI ডিজাইনার। তাই চিপ ফেব্রিকেশন নিয়ে আমাদের আর কোন সমস্যা নেই। আমরা সকল ধরণের সহযোগিতা তার কাছ থেকে পাব। এ ছাড়া তিনি আমাদের প্রাথমিক কাজ শুরু করার জন্য কিছু টুলস, ম্যাটেরিয়ালস্ এবং মেশিন পর্যাপ্ত ইনফরমেশন সহ আগামী সপ্তাহের মধ্যে পাঠিয়ে দেয়ার কথাও বলেছেন”।
মার্টিন দার কথা গুলো যেন আমাদের কাছে স্বপ্নের মত লাগছিল। আমরা বিষ্ময়ে আচ্ছন্ন হয়ে যাচ্ছিলাম।
আমাদের মধ্যে অনেক কথা হল। আলোচনার এক পর্যায়ে দাদা বলছিলেন আমি ঠিক করেছি আমাদের প্রথম প্রজেক্ট হবে ভূমিকম্প এবং অগ্নিকান্ড এর উপর। এ বিষয়ে কয়েকজন টেকনোলজিস্ট এর সাথেও কথা হয়েছে, যে কোন প্রয়োজনে তোমরা তাদের কাছ থেকেও টেকনিক্যাল সাহায্য নিতে পারবে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আমরা দ্রুত সফলতা পাব আশাকরি।
………………………………………………………………………………..
দৃষ্টি আকর্ষণ
একজন প্রযুক্তি প্রেমী সুখী মানুষের কল্পকাহিনী সম্পূর্ণরূপে কাল্পনিক । বাস্তবের সাথে এর কোন মিল নেই।