একজন প্রযুক্তি প্রেমী সুখী মানুষের কল্পকাহিনীঃ খন্ড-১
এক টুকরো সুখের আশায় আমাদের নিত্য পথচলা, আমাদের এই কর্মচঞ্চলতা। আমাদের অর্থ সম্পদই হোক অথবা সম্মান বা ব্যাক্তিগত অর্জনই হোক সব কিছুর মুখ্য উদ্দেশ্যই যেন একটু স্বস্তি, একটু স্বাচ্ছন্দ, এক টুকরো সুখ। এই পৃথিবীতে আমাদের প্রত্যেকের অবস্থান একটা সীমিত সময়ের জন্য, কিন্তু তার পরেও মানুষের জীবন সুখ আর দুঃখের দোলাচলে বৈচিত্রময়। নিজেকে একজন ক্ষুদ্র প্রযুক্তি প্রেমী ভাবতে শুরু করেছি। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রতি একটা অন্যরকম শ্রদ্ধা জন্মে গেছে। ভাবছিলাম একটা সায়েন্স ফিকশন লিখব, কিন্তু কিভাবে শুরু করব বুজতে পারছিলাম না। শেষ পর্যন্ত মনে হল এটাকে গতানুগতিকতার বাইরে এনে একটু ভিন্ন ভাবে শুরু করি। দেখা যাক কতটা ভিন্নতা আনতে পেরেছি।
………………………………………………………………………..
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি আর মানুষের জীবনের সুখী মুহর্তগুলোকে একীভুত করার একটা ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা “একজন প্রযুক্তিপ্রেমী সুখী মানুষের কল্পকাহিণী”।
আমি অনিন্দ কুমার ভৌমিক। প্রকৃত পক্ষে আমি একজন EEE ইজ্ঞিনিয়ার, যদিও বর্তমানে একটা প্রতিষ্ঠানে ওয়েব ডেভলপার স্পেসালিষ্ট হিসেবে কর্মরত আছি। এ সুবাদে কেউ কেউ আমাকে কম্পিউটার ইজ্ঞিনিয়ারও মনে করে থাকেন। আমার সব সময়ের নিত্যসঙ্গী এই পুরোনো ল্যাপটপ আর ক্যামেরাটা। আমি যখন ডিপ্লোমাতে ভর্তি হই, বাবা অনেক কষ্ট করে টাকা জমিয়ে ল্যাপটপটা কিনে দিয়েছিলেন। তাই অনেক মধুর স্মৃতিও জড়িয়ে আছে এটার সাথে। আজ যতটুকু প্রতিষ্ঠা পেয়েছি তার সবটুকু কৃতিত্ব একে উৎসর্গ করলেও ভুল হবে না।
এই যে ক্যামেরাটা দেখছেন, এটা আমি কিনেছিলাম বি এস সি তে ভর্তি হবার পরে। ক্যামেরাটার মডেলটা, এখন যে কেউ দেখনে বেশ পুরোনো বলবে । আসলে প্রযুক্তি এখন এত দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে, যে ছয় মাস আগে কেনা যে কোন কিছুই পুরোনো। সেখানে আমার ক্যামেরাটার বয়স প্রায় পনের বছর। এই ক্যামেরাটা আমার খুব পছন্দের। এটা আমাকে অনেক কিছু দিয়েছে, তার মধ্যে সবচেয়ে বড় পাওয়া সকল শ্রেণীর মানুষের ভালবাসা।
আমি যখন খেলায় মাতয়ারা শিশুদের ছবি তুলি, তখন আমিও তাদের সাথে মিশে যাওয়ার সুযোগ পাই। আমিও তাদের সাথে খেলি ধূলিকণা, বালুকণা আর কাঁদা মাটি নিয়ে।
আমি যখন বয়সের ভারে নুইয়ে পড়া, কোন বষস্ক মানুষের ছবি তুলি তারা খুশি হয়ে আমাকে জড়িয়ে ধরে অথবা ভালবাসার পরশ ছুইয়ে দেয়, আমার মাথায়। আমি পুলোকিত অনুভব করি। আবার যখন প্রকৃতির অপরূপ সুন্দর মূহর্ত গুলোকে ফ্রেমে বেঁধে ফেলার চেষ্টা করি, তখন নিজেকে প্রকৃতির খুব কাছের একজন মনে হয়। আর যখন নিজের ঘরে ফিরে যাই, প্রকৃতি যেন হাতছানি দিয়ে ডাকে। আর তাইতো সুযোগ পেলেই ছুটে যাই প্রকৃতির কাছে। নদী, পাহাড়, সমুদ্র সবই যেন আমার খুব চেনা, খুব কাছের।
নিজের জীবনকে সুন্দর করে সাজাতে বিশেষ কোন ব্যাক্তিকে অনুসরণ করলে, মন্দ হয় না। আমিও এমন একজনের সন্ধান পেয়েছিলাম, ঠিক যেমনটা আমি কল্পনা করতাম।
তার নাম জোসেফ মার্টিন, পেশায় একজন ম্যাকানিক্যাল ইন্জিনিয়ার। আজ খেকে প্রায় পনের বছর আগের কথা। ঠিক সঠিকভাবে নামটা মনে নেই, ওয়েবে কোন এটা সাইটে তার লেখায় মন্তব্য প্রদানের মাধ্যমে তার সাথে আমার প্রথম পরিচয় ঘটে। আমার জীবনে অনেক বিখ্যাত ব্যাক্তিদের জীবনী পড়েছি, যাদের সবাই কোন না কোন বিশেষ বিষয়ের উপর তাদের সৃজনশীল কৃতকর্মের দ্বারা বিখ্যাতদের কাতারে নিজের স্থান তৈরি করে গেছেন। কিন্তু জোসেফ মার্টিন, আমি যাকে “মার্টিন দা” বলে ডাকতাম তার ভেতরের প্রতিভা, সৃজনশীলতা, এবং একসাথে অনেকগুলো প্রযুক্তিগত বিষয়ে তার অভিজ্ঞতা, আর দশজন বিখ্যাত ব্যক্তিদের থেকে একটু আলাদা উচ্চতায় তাকে নিয়ে চিন্তা করার জন্য যথেষ্ট ছিল। ঠিক আমি তাকে একজন ইজ্ঞিনিয়ার না বলে একজন খাঁটি প্রযুক্তি প্রেমী মানুষ হিসেবে চিন্তা করতেই বেশি পছন্দ করি।