তক্ষণে সন্ধা হয়ে এসেছে। দাদার কথাগুলোর মাঝে আমরা যেন আমাদের ভবিষ্যতের পথ খুঁজতেছিলাম, আমাদের আর কোন কিছুই মাথায় ছিল না। কখন যে সময় চলে গেছে বুঝতেই পারিনি। যা হোক দাদার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে সবাই ফিরে এলাম। দাদা আমাদেরকে সকল ডকুমেন্টস এর একটা কপি দিয়েছিলেন। আমার বন্ধুরাও দাদার মত একজন আদর্শ দিক নির্দেশক পেয়ে খুব খুঁশি। কাজের প্রতি তাদের আগ্রহ অনেক বেড়ে গেছে। তারা যেন এমন কিছু পেয়েছে যেন এখন কোন বাধাই আর বাঁধা না। আসলে দাদার কাছ থেকে এমন কিছু নিয়ে ফিরলাম যা কখনো আমাদের পরিকল্পনাতেই আসেনি, আমরা যেন সবকিছু চাওয়ার আগেই সব পেয়ে গেছি।
…………………………………………………………………………………………
এক সপ্তাহ পরের কথা, দিনটি ছিল শুক্রবার; মার্টিন দা ফোন করে বললেন জাপান থেকে আমাদের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র চলে এসেছে। আমরা এখন খুব দ্রুত প্রথম প্রজেক্ট এর জন্য কাজ শুরু করতে পারি।
আমি এবং আমার বন্ধুরা মিলে ভুমিকম্পের উপর বিভিন্ন উৎস থেকে তথ্য সংগ্রহ করে প্রজেক্ট এর জন্য একটা ধারণা তৈরি করে মার্টিন দার সাথে দেখা করতে গেলাম। আমাদের উদ্দেশ্য ছিল একটা কমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক তৈরি করা যার মাধ্যমে সুক্ষভাবে ভূমিকম্প সংগঠনের কেন্দ্র খুজে বের করা যায় এবং সাথে সাথে এমন একটা রোবট ডেভলপ করা যা সংক্ষিপ্ত সময়ের মধ্যে ভুমিকম্প সংগঠনের কেন্দ্রের কাছাকাছি স্থানে পৌছে ভূমিকম্পের ফলে সৃষ্ট পি এবং এস তরঙ্গের বিপরেীতে ক্রিয়া করে পি এবং এস তরঙ্গের ক্রিয়াকে বন্ধ করবে। আমাদের ধারণা যে প্রজেক্টটি সফল করতে  পারলে ভুমিকম্প সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করতে না পারলেও বড় ধরণের ভুমিকম্প যেমন VII বা VIII  মাত্রার ভূমিকম্পকে আমরা IV বা V মাত্রার মধ্যে নিয়ে আসতে পারব। মার্টিন দার সামনে পুরো বিষয়টি আমি উপস্থাপন করলাম।
মার্টিন দা আমাদের পরিকল্পনা দেখে খুশি হলেন। দাদা ভুমিকম্প বিষয়ক গবেষণা সংস্থার সাথে জড়িত আরো দুইজন ব্যাক্তিকে আমন্ত্রণ করেছিলেন, আমরাও তাদের সাথে পরিচিত হলাম। উনাদের কাছ থেকেও আমরা গুরুত্বপূর্ণ কিছু পরামর্শ পেলাম। উনারা আমাদের কাজে সার্বক্ষণিক সহযোগিতা করার ইচ্ছা প্রকাশ করলেন
মোটামটিভাবে বলা যায় আমরা প্রথম ধাপ অতিক্রম করতে পেরেছি। এখন আমাদের প্রধান কাজ হবে নেটওয়ার্ক মডেল তৈরি করা এবং রোবটের জন্য ম্যাকানিক্যাল স্ট্রাকচার ডেভলপ করা। দাদা বললেন ম্যাকানিক্যাল স্ট্রাকচার ডেভলপমেন্ট এর কাজটা উনার উপর ছেড়ে দিতে। আমরাও খুশি হলাম।
এর পর দাদা আমাদের গবেষণা কার্য পরিচালনার জন্য জাপান থেকে আসা উপকরণ গুলো এক এক করে দেখালেন। এর মধ্যে বেশ কিছু কমপ্লিট রোবটিক্স মডেলও ছিল। আমরা সবাই মিলে এগুলো পর্যবেক্ষণ করলাম। ম্যনুয়্যাল দেখে দেখে আমরা এ গুলোর ক্রিয়াকলাপ, গঠন প্রকৃতি, ক্ষমতা ইত্যাদি পর্যবেক্ষণ করলাম। এগুলোর মধ্যে বেশ কিছু ভিজুয়্যাল সফটওয়্যার ছিল যা দিয়ে খুব সহজেই গ্রাফিক্যাল মুডে প্রোগ্রাম তৈরি করে শক্তিশালী, জটিল এবং সুক্ষ কাজ সম্পাদনে সক্ষম রোবটিক্স ব্রেইন ডেভলপ করা যায়। প্রায় ২৫ টার মত রোবটিক্স মডিউল ছিল যা রোবটের বিভিন্ন অংশের গঠন নিয়ে গবেষণা করার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক ডেভলপমেন্ট বিষয়ে গবেষণা পরিচালনার জন্য একটা বিশেষ ধরণের কম্পিউটার এবং প্রায় ১৫ টার মত মডিউল এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত ছিল।
আমাদের ভার্সিটির মাধ্যমে থেকে বেশ কিছু প্রতিষ্ঠ্যনের নেটওয়ার্ক ল্যবে প্রাকটিক্যাল করার সুযোগ হয়েছে। কিন্তু আমরা আজ যে সব মডিওলের সাথে পরিচিত হলাম এগুলো আগে কখনোই দেখি নি।
আমাদের জন্য আরো একটা চমক অপেক্ষা করছিল। দাদা আমাদেরকে নিয়ে একটা যায়গায় নিয়েগেলেন, আমরা বোইরে থেকেই দেখে বুঝলাম এটা একটা ল্যাবরেটরী। দাদা বললেন আমি আমার ইন্ডাস্ট্রির গুরুত্বপূর্ণ প্রোডাক্টের গবেষণার জন্য গত বছর এটা তৈরি করেছিলাম, তোমরা এখন এটাকে তোমাদের গবেষণার জন্য ব্যবহার করবে, আর আমিও সার্বক্ষণিকভাবে তোমাদের কাছাকাছি থাকার চেষ্টা করব।
দৃষ্টি আকর্ষণ
একজন প্রযুক্তি প্রেমী সুখী মানুষের কল্পকাহিনী সম্পূর্ণরূপে কাল্পনিক । বাস্তবের সাথে এর কোন মিল নেই।

Find us on Facebook

Categories