গুগল অ্যান্ড্রয়েড স্ট্যাডি জ্যাম এর মাধ্যমে বাংলাদেশে তৈরি হল ৭৪৬টি অ্যাপ। এক হাজার নতুন অ্যান্ড্রয়েড ডেভেলপার তৈরির উদ্যোগ নিয়ে শুরু হয়েছিল গুগল অ্যান্ড্রয়েড স্ট্যাডি জ্যাম।

(প্রিয় টেক) গুগল অ্যান্ড্রয়েড স্ট্যাডি জ্যাম এর মাধ্যমে বাংলাদেশে তৈরি হল ৭৪৬টি অ্যাপ। এক হাজার নতুন অ্যান্ড্রয়েড ডেভেলপার তৈরির উদ্যোগ নিয়ে শুরু হয়েছিল গুগল অ্যান্ড্রয়েড স্ট্যাডি জ্যাম। গুগলের এই কার্যক্রম সমন্বয় ও পরিচালনা করেছে গুগল ডেভেলপার্স গ্রুপের (জিডিজি) জিডিজি ঢাকা, জিডিজি সোনারগাও, জিডিজি বাংলা এবং উইমেন টেকমেকার এই চার কমিউনিটি।  
গত ২২ আগস্ট থেকে শুরু হয় এই কোর্সের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম। মূলত দেশের ৯টি (ঢাকা, চট্টগ্রাম, ফেনী, কুমিল্লা, খুলনা, সিলেট, রাজশাহী, রংপুর ও দিনাজপুর) জেলার মোট ৩৮টি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে  ৭০০০ এরও বেশি রেজিস্ট্রেশন করে 'অ্যান্ড্রয়েড ডেভেলপমেন্ট ফর বিগেনার্স' শিরোনামের এই কোর্সটিতে। মোট ১১৭২ জন নির্বাচিত হয়ে কোর্সটিতে অংশগ্রহন করার সুযোগ পায় এবং এদের মধ্য থেকে তৈরি হয় ৭৪৬টি অ্যাপ। সর্বোচ্চ সংখ্যক অ্যাপ সাবমিট করে প্রথম সারির দিকে জায়গা করে নেয় ঢাকার আহসানউল্লাহ ইউনিভার্সিটি অফ সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি এবং ইউনিভার্সিটি অফ ইনফরমেশন, টেকনোলজি এন্ড সায়েন্স।  
কোর্সটিতে অংশ্রগ্রহনকারীদের মধ্যে শতকরা হারে ৪৯ ভাগ ছিল প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়, ৪৪ ভাগ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় এবং ১৭ ভাগ বিভিন্ন টেকনোলজি ইন্সটিটিউটের শিক্ষার্থী। এর মধ্যে ছেলেদের সংখ্যা ছিল শতকরা ৭৯ ভাগ এবং মেয়েদের সংখ্যা ছিল শতকরা ২১ ভাগ। মোট ৩৮ টি গ্রুপের মধ্যে ৫টি গ্রুপ শুধুমাত্র মেয়েদের নিয়ে গঠিত হয়। সবমিলিয়ে মেয়েদের অংশগ্রহনের দিক থেকে রংপুর বিভাগ যথেষ্ঠ এগিয়ে, মোট ২১% মেয়ে অংশগ্রহনকারীর মধ্য থেকে দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ও ডেল্টা কম্পিউটার সায়েন্স কলেজ থেকে এই সংখ্যা ছিল সর্বোচ্চ।  
মোট হিসেবে ২৩% পাশের হার অর্জন করে প্রথম সারিতে রয়েছে কুমিল্লা এবং শুধুমাত্র মেয়েদের মধ্য থেকে পাশের হার  ২৬% অর্জন করে প্রথম সারিতে রয়েছে রংপুর বিভাগ। ওমেন টেকমেকারস লিড রাখশান্দা রুখাম বলেন "মেয়েদের অভাবনীয় সাড়া পাওয়া গেছে । আমরা ভাবতেই পারই নাই মেয়েরা এত অ্যাপ বানাতে সক্ষম হবে।" আরেক লিড ফারাহ নাজিফা বলেন "ব্র্যাক ইউনিভারসিটিতে আমরা ২০ জনের স্থানে ৮০ জনের ব্যবস্থা করতে সক্ষম হয়েছি। আমরা আনঅফিসিয়ালি এই রকমের কোর্স আরও চালিয়ে যাব ।"
জিডিজি সোনারগাও এর ম্যানেজার আশ্রাফ আবির বলেন, “গুগলের এটা সত্যিই একটা ইফেক্টিভ কার্যক্রম, যার মাধ্যমে এত কম সময়ে ১০০০ এর বেশি নবীন এন্ড্রয়েড ডেভেলপার তৈরি করা সম্ভব হয়েছে। নিকট ভবিষ্যতে অবশ্যই এরা প্রযুক্তিতে অনেক ভাল অবদান রাখবে বলে আমরা আশা করি।” জিডিজি বাংলার ম্যানেজার জাবেদ সুলতান পিয়াস বলেন, “দেশে এরকম কিছু কার্যক্রম নিঃসন্দেহে আমাদের নবীন ডেভেলপারদের জন্য অনেক গুরুত্তপুর্ন। এরকম কর্মসূচী আরো বেশি বেশি দরকার।” 
নির্বাচিতরা শীর্ষ অনলাইন ট্রেইনিং প্রতিষ্ঠান উডাসিটির ২০০ ডলার সমমূল্যের একটি কোর্স করতে পেরেছে সম্পুর্ন বিনামূল্যে। গুগল ডেভেলপার গ্রুপ ঢাকার উপদেষ্টা ও প্রজেক্টের প্রধান সমন্বয়ক আরিফ নিজামী বলেন, “বাংলাদেশে এখন কম্পিউটার প্রোগ্রামিংয়ে অনেকেই ভালো করছে। সেই তুলনায় মোবাইল ফোন প্লাটফর্মের জন্য নতুন ডেভেলপার তৈরি হচ্ছে না। কিন্তু প্রযুক্তি বিশ্বে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে মোবাইল অ্যাপসসহ অ্যান্ড্রয়েড প্লাটফর্মে আমাদেরকে আরও সক্রিয় হতে হবে। আর এজন্যই আমাদের এই আয়োজন। এই কার্যক্রমের ফলে দেশে ১ হাজারেরও বেশি নতুন সার্টিফাইড অ্যান্ড্রয়েড ডেভেলপার তৈরি সম্ভব হয়েছে।”
স্ট্যাডি জ্যাম কার্যকর করতে কোর্সটিতে একজন মডারেটরের তত্ত্বাবধানে প্রতিটি স্ট্যাডি গ্রুপে ৩০ জন ডেভেলপার অংশ নেয়। কোর্স কার্যক্রম অনলাইনে পরিচালিত হলেও এর বিভিন্ন সমস্যা ও সমাধান নিয়ে স্টাডি গ্রুপে সপ্তাহে একদিন আলোচনা হয়। সব ভেন্যুতে স্ন্যাক্স, যোগাযোগ খরচ, ডেকোরেশন, প্রশিক্ষক পারিশ্রমিক, স্টিকার,টি-শার্ট,নোটপ্যাড,কলমসহ ইত্যাদি সব ধরনের ব্যয় বহন করে কার্যক্রমটির আয়োজকবৃন্দ। সমস্ত কার্যক্রমটি কোঅরডিনেট করেন প্রেনিউরল্যাবের এন্ড্রয়েড ডেভেলপার তৌহিদুল ইসলাম স্বপন। 
উল্লেখ্য, প্রশিক্ষণার্থীদের মধ্য থেকে সেরা কয়েকজনকে স্বনামধন্য প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানে ইন্টার্নশিপ করার সুযোগ দেয়া হবে।  এই আয়োজনের সহযোগী বাংলাদেশ সরকারের আইসিটি ডিভিশন, এমসিসি লিমিটেড, বেসিস স্টুডেন্টস্ ফোরাম ও প্রেনিউরল্যাব। প্রোগ্রামের বিস্তারিত ও পরবর্তী কার্যক্রম নিয়ে জানা যাবে  www.codeforbd.com এই ঠিকানায়

Find us on Facebook

Categories