Slow কম্পিউটার করে নিন Fast, 13 post

কম্পিউটার হার্ডওয়্যার-
 যদিও এ বিষয়ে পূর্বের টিউনে আলোচনা  হয়েছে, তবুও আরেকটু রিভিউ করছি ।  কম্পিউটারের ইনপুট ডিভাইস ও আউটপুট বিভাইসসহ অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক সকল যন্ত্রংশকে একসাথে কম্পিউটার হার্ডওয়্যার বলা হয়।
কম্পিউটার হার্ডওয়্যারের প্রয়োজনীয় বিষয় সমূহ-

কম্পিউটারের ইনপুট ডিভাইস সমূহ-

  • কী বোর্ড
  • মাউস
  • জয়স্টিক
  • স্ক্যানার

কম্পিউটারের আউটপুট ডিভাইস সমূহ-

  • মনিটর
  • স্পিকার
  • প্রিন্টার
  • প্লটার
 
এখন একটু পেছনে ফিরে তাকাই । কম্পিউটারের ইতিহাস নিয়ে আলোকপাত করি । 
 
কম্পিউটারের আবির্ভাব :
কম্পিউটারের আবির্ভাব হয়েছে এবাকাস নামক একটি গণনা যন্ত্রের মাধ্যমে ।  খ্রিস্টপূর্ব ৩০০০ সালে ব্যাবিলনে এবাকাস আবিস্কার হয় বলে ধারণা করা হয়। অ্যাবাকাস দিয়ে সাধারণত যোগ, বিয়োগ, গুণ, ভাগ, বর্গ ও বর্গমূল নিরূপন করা যেত।  পর্যায়ক্রমে এবং কালের বিবর্তকনে কম্পিউটারের আবির্ভাব ।  কম্পিউটারের জনক বলা হয় চার্লস ব্যাবেজকে ।
 
এবার কম্পিউটারের প্রজন্ম নিয়ে একটু আলোকপাত করি । 
 
কম্পিউটারের প্রজন্ম- 
ইতিহাস পর্যালোচনা কর দেখা যায় যে, কম্পিউটারের ৫টি প্রজন্ম ।
প্রত্যেকটি প্রজন্মেরই আলাদা আলাদা বৈশিষ্ট্য রয়েছে ।
প্রথম প্রজন্ম ১৯৫১ থেকে ১৯৫৯ । এ প্রজন্মের কম্পিউটারের বৈশিষ্ট্য- 
১। আকারে বড় এবং প্রচুর তাপ উৎপাদনকারী;
২। মেমরি অত্যন্ত অল্প;
৩। ভ্যাকুয়াম টিউব দিয়ে তৈরি;
৪। মেমরি চৌম্বকীয় ড্রামের;
৫। কোড ব্যবহার করে প্রোগ্রাম চালানোর ব্যবস্থা;
৬। এই কম্পিউটারের যান্ত্রিক গোলযোগ, রক্ষণাবেক্ষণ ও পাওয়ার খরচ বেশি এবং
৭। এই প্রজন্মের কম্পিউটারে যান্ত্রিক ভাষায় প্রোগ্রাম লিখা হত।
দ্বিতীয় প্রজন্ম ১৯৫৯ থেকে ১৯৬৫ । এ প্রজন্মের কম্পিউটারের বৈশিষ্ট্য- 
১।  এটিতে মডিউল ডিজাইন ব্যবহার করে সার্কিটের প্রধান প্রধান অংশগুলো আলাদা বোর্ডে তৈরি করা যেত;
২। অধিক নির্ভরশীল, অধিক ধারণক্ষমতা এবং তথ্য স্থানান্তরের সুবিধা;
৩।সাইজে ছোট, গতি বেশি এবং বিদ্যুৎ ও তাপ উৎপাদন কম;
৪। ট্রানজিস্টর দ্বারা তৈরি ও মেমরি চুম্বক কোরের এবং
৫। অ্যাসেম্বলি ভাষায় প্রোগ্রাম লিখা হত।
তৃতীয় প্রজন্ম ১৯৬৫ থেকে ১৯৭১ । এ প্রজন্মের কম্পিউটারের বৈশিষ্ট্য- 
১। বিভিন্ন প্রকার উন্নত মেমরি ব্যবস্থার উদ্ভাবন;
২। ব্যাপক একীভূত বর্তনীর ব্যবহার;
৩। সাইজ ছোট বলে বিদ্যুৎ খরচ কম এবং
৪। উচ্চ ভাষা দিয়ে প্রোগ্রাম লিখা তৃতীয় প্রজন্মের কম্পিউটার থেকে শুরু হয়।
চতুর্থ প্রজন্ম ১৯৭১ থেকে বর্তমান সময় । এ প্রজন্মের কম্পিউটারের বৈশিষ্ট্য- 
১। উন্নত চিপ এর ব্যবহার ও ক্ষুদ্রাকৃতির কম্পিউটার;
২। বিশাল পরিমাণ মেমরি ও অত্যন্ত গতি এবং
৩। টেলিযোগাযোগ লাইন ব্যবহার করে ডাটা আদান-প্রদান।
পঞ্চম প্রজন্ম হচ্ছে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম । এ প্রজন্মের কম্পিউটারের বৈশিষ্ট্য- 
১। এই ধরণের কম্পিউটার প্রতি সেকেন্ডে ১০-১৫ কোটি যৌক্তিক সিদ্ধান্ত নিতে পারবে।
২।শব্দের মাধ্যমে যোগাযোগ করা যাবে। ফলে এই প্রজন্মের কম্পিউটার শুনতে পারবে এবং কথা বলতে পারবে।
৩।এই প্রজন্মের কম্পিউটারের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা থাকবে। ফলে কম্পিউটার অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করে তা সিদ্ধান্ত গ্রহণে
ব্যবহার করতে পারবে।
৪।ভিজুয়্যাল ইনপুট বা ছবি থেকে ডাটা গ্রহণ করতে পারবে।
চলুন এবার যথারীতি ট্রাবলশ্যুটিং ও মেইনটেনেন্স সম্পর্কে আলোকপাত করি । 
গত পর্বে ট্রাবলশ্যুটিং ও মেইনটেনেন্স বিষয়ে আলোচনা করেছি । 
এখন সমস্যা ও সামাধানের বিষয়ে পরবর্তী আলোচনা করা যাক-
 সমস্যা নং ২১ : কম্পিউটার অন করলে ৫ থেকে ১০ মিনিটের মধ্যেই আবার সাট ডাউন হয়ে যায় ।  ৫ থেকে ১০ মিনিটের বেশী স্থির থাকেনা । র‌্যাম পরিবর্তন করলেও কোন কাজ হচ্ছে না । 
 সমাধান- র‌্যাম এ সমস্যা হলে এমন হওয়ার কথা নয় ।  আপনার কম্পিউটারের প্রসেসর ওভার হীট হচ্ছে ।  যেকারণে এমন আচরণের উদ্ভব হয়েছে ।  কম্পিউটারের প্রসেসর ওভারহীট হলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে কম্পিউটার ৫-১০ মিনিটের মধ্যেই কিংবা আরো কম সময়ে অফ হয়ে যায় ।  এক্ষেত্রে প্রসেসর এর উপর ঠান্ডা পেস্ট দিন । তারপর ভালোভাবে প্রসেসর এর উপর হীটসিংকটি লাগিয়ে কম্পিউটার আবার অন করুন । এখন আর ৫ থেকে ১০ মিনিটের মধ্যে আর সাট ডাউন কিংবা অফ হয়ে যাবেনা ।
সমস্যা নং ২২ : কম্পিউটার অন করলে উইন্ডোজ আসার আগেই আবার রিস্টার্ট  হয়ে যাচ্ছে ।  ডেস্কটপ আসে না ।
সমাধান- সম্ভবত আপনার কম্পিউটারের উইন্ডোজের ফাইল মিসিং হয়েছে । এক্ষেত্রে নতুন করে উইন্ডোজ দেয়া লাগতে পারে । তবে যদি সি ড্রাইভ ক্রাশ না করে তবে নতুন করে সেটআপ না  দিয়ে শুধু রিপেয়ার দিলেও চলবে । তাতে আপনার জরুরী ফাইলগুলো হারানোর ভয় থাকবে না ।
সমস্যা নং ২৩ : কম্পিউটার অন করলে ফার্মওয়ারের লেখা আসার পর হ্যাং হয়ে থাকে ।  আর কিছু আসে না ।
সমাধান- সম্ভবত আপনার কম্পিউটারের কোন ডিভাইস এর সংযোগ লুজ হয়ে আছে ।  কম্পিউটার খুলে সকল ডিভাইস নতুন করে আবার লাগান । আশা করি সমাধান হয়ে যাবে ।
সমস্যা নং ২৪ : কম্পিউটারের পাওয়ার অন করলে মাদারবোর্ডে  লোগো এসে ডিসপ্লে আটকে থাকে ।
সমাধান-  আপনার কম্পিউটারের বায়োস কাজ করছে না ।  কম্পিউটার খুলে বায়োস রিসেট করে দিন । এছাড়া সিউর হয়ে নিন মাদারবোর্ডের ব্যাটারীর চার্জ  আছে কিনা ।  না থাকলে নতুন একটি সিমস ব্যাটারী লাগিয়ে নিন ।
সমস্যা নং ২৫ : কম্পিউটারের ডেস্কটপে কোন আইকন শো করেনা  ।    স্টার্ট  মেনু সহ কোন বার আসে না ।
সমাধান-  আপনার কম্পিউটার ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হয়েছে । যেকারণে ডেস্কটপের কোন আইকন শো করছে না ।  কীবোর্ড  থেকে Ctrl+Alt+Del প্রেস করে আপাতত লগআউট করুন ।  তারপর আবার ইউজার আইকনে ক্লিক করুন ।  এখন আপনার ডেস্কটপ আইকন শো করবে ।  বারবার একই সমস্যা হলে উইন্ডোজ রিপেয়ার দিন । আর একটি ভালো মানের এন্টিভাইরাস সেটআপ দিন ।
সমস্যা নং ২৬:  কম্পিউটারে সাউন্ড সিস্টেমে সমস্যা হচ্ছে,  সাউন্ড শোনা গেলেও সাউন্ড বাড়ানো কমানোর অপশন কাজ করেনা ।
সমাধানঃ আপনার কম্পিউটারের সাউন্ড কার্ডের সফটওয়্যারটি আবার ইন্সটল  করুন । সাউন্ড কার্ডের ড্রাইভার ফাইল মিসিং হওয়ার কারণে এমন সমস্যা হয়েছে ।
সমস্যা নং ২৭ : কম্পিউটার এর পাওয়ার অন করলে কোন ডিসপ্লে আসে না ।   নতুন ভাবে সকল ডিভাইস লাগানোর পরও একই সমস্যা ।
সমাধান- সম্ভবত আপনার কম্পিউটারের র‌্যাম লুজ হয়ে আছে  কিংবা র‌্যাম কাজ করছে না ।  কম্পিউটার খুলে র‌্যাম এর স্লট পরিবর্ত ন করে দিন ।   অথবা নতুন একটি র‌্যাম লাগিয়ে দেখুন ।  সমাধান হয়ে যাবে ।
সমস্যা নং ২৮ : কম্পিউটার হতে প্রিন্টারে প্রিন্ট দিলে প্রিন্ট যায় না ।  এরর মেসেজ আসে ।
সমাধান- আপনার কম্পিউটারের সাথে সংযুক্ত প্রিন্টার এর ড্রাইভার ফাইল মিসিং হয়েছে । নতুন করে প্রিন্টারের ড্রাইভার সেটআপ দিন । অথবা আপনার কম্পিউটারের সাথে সংযুক্ত প্রিন্টার যদি নেটওয়ার্কের সাথে অন্য কম্পিউটারে সংযুক্ত থাকে তবে সেক্ষেত্রে নেটওয়ার্ক  চেক করে দেখুন ওকে আছে কিনা ।  নেটওয়ার্ক ঠিক থাকলে প্রিন্ট যাওয়ার কথা, আর শিউর হয়ে নিন আপনি ডিফল্ট প্রিন্টার হিসেবে প্রিন্ট দিচ্ছেন তো নাকি অন্য কোন অপরিচিত নেটওয়ার্কের লোকেশনের প্রিন্টার সিলেক্ট করে প্রিন্ট দিচ্ছেন ।
সমস্যা নং ২৯ : কম্পিউটার এর ডিসপ্লে কাপা কাপা আসে  । হাই ডেফিনিশন ভিডিও চলে না  ।
সমাধান- আপনার কম্পিউটারের ডিসপ্লে ড্রাইভার ঠিকতম ইন্সটল করা নেই ।   ডিসপ্লে ড্রাইভার ইন্সটল করুন । মাদারবোর্ডের সিডি হারিয়ে ফেললে অটো ড্রাইভার প্যাক সলুশন সফটওয়ারের সাহায্য নিন ।
 সমস্যা নং ৩০ : কম্পিউটার এর মাদারবোর্ডের সিডি হারিয়ে গেছে, নতুনভাবে অপারেটিং সিস্টেম সেটআপ দিয়ে আর কোন কিছু ইন্সটল করা যাচ্ছে না ।
সমাধান- আপনার কম্পিউটারের মাদারবোর্ডের সিডি হারিয়ে ফেললে অটো ড্রাইভার প্যাক সলুশন সফটওয়ারের মাধ্যমে সকল ডিভাইস সেটআপ দিতে পারবেন । সেক্ষেত্রে মাদারবোর্ডের সিডি হারিয়ে ফেললেও দুশ্চিন্তা করতে হবে না।   সকল ডিভাইস সেটআপ দিতে পারবেন অটো ড্রাইভার প্যাক সলুশন সফটওয়ারের সাহায্যে ।
সমস্যা নং ৩১ :  কম্পিউটার এর পাওয়ার অন করলে বারবার  F1  দিতে হয়, এছাড়া কম্পিউটার অন হয় না ।
সমাধান- আপনার কম্পিউটারের মাদারবোর্ডের সিমস ব্যাটারীর চার্জ  শেষ হয়ে গেছে  ।  তাই তারিখ ও সময় ঠিক না থাকায় বারবার F1 দিতে হয় । নতুন একটি  সিমস ব্যাটারী লাগিয়ে নতুনভাবে সময় ও তারিখ ঠিক করে দিলে আর F1 দিতে হবে না ।
সমস্যা নং ৩২ :  কম্পিউটার প্রচন্ড শ্লো কাজ করে  ।  একটি কমান্ডে ক্লিক করলে অনেক সময় নিয়ে এক্সিকিউট হয়।
সমাধান- আপনার কম্পিউটারের অপ্রয়োজনীয় সফটওয়ার ইন্সটল করা আছে ।  সেগুলো রিমুভ করে দিন।  আর অতিরিক্ত ফাইলগুলো সব রিমুভ করে দিন ।  তাছাড়া স্টার্ট আপের অপ্রয়োজনীয় প্রোগ্রামগুলোও অফ করে রাখুন । আর একাধিক এন্টিভাইরাস কখনো  ইন্সটল করবেননা ।  এজন্য কম্পিউটার প্রচুর শ্লো হয়ে যায় ।  তাই যেকোন একটি রাখুন ।
সমস্যা নং ৩৩ :  কম্পিউটার -এ পেন ড্রাইভ লাগালে সব ফাইল শর্টকাট দেখায় ।  আসল ফাইল খুজে পাওয়া যায়না।
সমাধান- আপনার কম্পিউটারে ভাইরাস ছড়িয়ে গেছে ।  যেকারণে পেন ড্রাইভ লাগালেই এমন অবস্থা হয় । আপাতত ফোল্ডার অপশনে গিয়ে ভিউতে গিয়ে শো হিডেন ফাইল দিয়ে মূল ফাইল দেখতে পোরবেন ।  আর আইরিসেট নামক সফটওয়ার দিয়ে হিডেন ফাইল ঠিক করা যাবে ।  সি ড্রাইভ ফরমেট করে নতুন করে উইন্ডোজ সেটআপ দিলে এ সমস্যা আর থাকবে না ।

Find us on Facebook

Categories