একাত্তরের নায়ক আপনিও!
কল অব ডিউটি বা কাউন্টার স্ট্রাইকের মতো গেম খেলতে খেলতে কখনো মনে হয়েছে, ইশ্! মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে এরকম একটা গেম যদি থাকত! একাত্তরের দিনগুলি বা গেরিলা থেকে সম্মুখ যুদ্ধ পড়তে পড়তে হয়তো শিহরিত হয়ে ভেবেছেন, সেই সময়ে জন্ম হলো না কেন! মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে সে রকম একটি গেম খেলার জন্য এখন আর হাপিত্যেশ করতে হবে না। দেশকে শত্রুমুক্ত করার সাধ ‘হিরোস অব ৭১’ খেলে একটু হলেও মেটানো যাবে! এই গেমে আপনি নিজেই হতে পারেন একাত্তরের একজন নায়ক। স্মার্টফোনে খেলা যাবে গেমটি। আপাতত শুধু অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমেই গেমটি চলবে। এটি তৈরি করেছে তরুণদের প্রতিষ্ঠান পোর্টব্লিস।
অপারেশন শনিরচর
১৯৭১ সালে ১৫ সেপ্টেম্বর। মধুমতী নদীর কোল ঘেঁষে বরিশালের প্রত্যন্ত গ্রাম শনিরচর। শামসু, বদি, তাপস, সজল, কবির—পাঁচজনের দলটির অভিযান এই গ্রামেই। সেখানে পাকিস্তানিরা ক্যাম্প করে আস্তানা গেড়েছে, তাদের কাছ থেকে স্কুলঘরের ক্যাম্পটা দখল করতে হবে। দলের নেতা শামসু, তার নামেই এই খুদে গেরিলা দলের নাম ‘শামসু বাহিনী’।
এক রাতে গেরিলা দল অতর্কিতে হামলা করে ক্যাম্পে। মেশিনগান আর গ্রেনেডের মুখে পাকিস্তানি বাহিনী দিশেহারা হয়ে পালিয়ে যায়। কিন্তু শামসুরা জানে, একটু পরে শত্রুরা আরও দলে ভারী হয়ে ফিরে আসবে। পাঁচজন মিলে খুব বেশিক্ষণ ক্যাম্পের দখল রাখতে পারবে না। আরও বড় দলের সাহায্য তাদের লাগবেই। ঠিক হয়, বদি যাবে ধারেকাছে মুক্তিযোদ্ধাদের আরেকটি দলকে নিয়ে আসতে। আর ততক্ষণ পর্যন্ত শামসু, সজল আর তাপস আটকে রাখবে পাকিস্তানি বাহিনীকে। হিরোস অব ৭১ গেমের শুরু এখান থেকেই।
১৯৭১ সালে ১৫ সেপ্টেম্বর। মধুমতী নদীর কোল ঘেঁষে বরিশালের প্রত্যন্ত গ্রাম শনিরচর। শামসু, বদি, তাপস, সজল, কবির—পাঁচজনের দলটির অভিযান এই গ্রামেই। সেখানে পাকিস্তানিরা ক্যাম্প করে আস্তানা গেড়েছে, তাদের কাছ থেকে স্কুলঘরের ক্যাম্পটা দখল করতে হবে। দলের নেতা শামসু, তার নামেই এই খুদে গেরিলা দলের নাম ‘শামসু বাহিনী’।
এক রাতে গেরিলা দল অতর্কিতে হামলা করে ক্যাম্পে। মেশিনগান আর গ্রেনেডের মুখে পাকিস্তানি বাহিনী দিশেহারা হয়ে পালিয়ে যায়। কিন্তু শামসুরা জানে, একটু পরে শত্রুরা আরও দলে ভারী হয়ে ফিরে আসবে। পাঁচজন মিলে খুব বেশিক্ষণ ক্যাম্পের দখল রাখতে পারবে না। আরও বড় দলের সাহায্য তাদের লাগবেই। ঠিক হয়, বদি যাবে ধারেকাছে মুক্তিযোদ্ধাদের আরেকটি দলকে নিয়ে আসতে। আর ততক্ষণ পর্যন্ত শামসু, সজল আর তাপস আটকে রাখবে পাকিস্তানি বাহিনীকে। হিরোস অব ৭১ গেমের শুরু এখান থেকেই।
একটু একটু করে গিয়ে চলা
শুরুটা হয়েছিল গেমের নেশা থেকে। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) যখন পড়তেন, তখন থেকেই রাতভর গেমে বুঁদ হয়ে থাকতেন মাশা মুস্তাকিম ও অপ্রতিম চক্রবর্তী। তখন থেকেই মাথায় খেলে যায়, আরে, একটা গেম তো নিজেরাই বানানো যায়। ২০১১ সালে একটু একটু করে স্বপ্নের বীজ বোনা শুরু। ২০১৩ সালের শুরুর দিকে মাশা-অপ্রতিম একটু একটু করে গেম বানানো শুরু করেন। এটি কাঠামোগত একটা আঙ্গিক পায় চলতি বছরের মার্চে এসে, নিজেদের প্রতিষ্ঠান পোর্টব্লিসের যাত্রা শুরুর মাধ্যমে। মাশা ও অপ্রতিমের সঙ্গে যোগ দেন পাপনজিত দে আর আরিফুর রহমান। পানজিত পড়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে, আরিফুর বুয়েটে। তখন থেকে গেমের ভাবনাগুলো অঙ্কুরিত হতে থাকে। জুনিয়র প্রোগ্রামার হিসেবে যোগ দেন বুয়েটের ছাত্র অভিক চৌধুরী ও আবদুল জাওয়াদ। এপ্রিলে বুয়েটের আরেক ছাত্র রেহাব উদ্দিন আসার পর ত্রিমাত্রিক (থ্রিডি) গ্রাফিকস আরেকটু সমৃদ্ধ হয়। সেপ্টেম্বরে রকিবুল আলম যোগ দেওয়ার পর শিল্পীদের দল নতুন করে প্রেরণা পায়। রাকিবুল পড়তেন বুয়েটের স্থাপত্য বিভাগে। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকানো নয়। সবার চেষ্টায় ১৬ ডিসেম্বরেই প্রকাশ পায় ‘হিরোস অব ৭১’। গেমের মূল কাহিনি লিখেছেন ওমর রশীদ চৌধুরী, আবহসংগীত ও শব্দসংযোজন করেছেন তপেশ চক্রবর্তী। বিপণন ও প্রচারণা দেখছেন প্রিয়ম মজুমদার ও হাসান আল রাজি। গুগল প্লে স্টোরে ছাড়ার পর ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৯১ হাজার বার নামানো হয়েছে গেমটি!
শুরুটা হয়েছিল গেমের নেশা থেকে। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) যখন পড়তেন, তখন থেকেই রাতভর গেমে বুঁদ হয়ে থাকতেন মাশা মুস্তাকিম ও অপ্রতিম চক্রবর্তী। তখন থেকেই মাথায় খেলে যায়, আরে, একটা গেম তো নিজেরাই বানানো যায়। ২০১১ সালে একটু একটু করে স্বপ্নের বীজ বোনা শুরু। ২০১৩ সালের শুরুর দিকে মাশা-অপ্রতিম একটু একটু করে গেম বানানো শুরু করেন। এটি কাঠামোগত একটা আঙ্গিক পায় চলতি বছরের মার্চে এসে, নিজেদের প্রতিষ্ঠান পোর্টব্লিসের যাত্রা শুরুর মাধ্যমে। মাশা ও অপ্রতিমের সঙ্গে যোগ দেন পাপনজিত দে আর আরিফুর রহমান। পানজিত পড়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে, আরিফুর বুয়েটে। তখন থেকে গেমের ভাবনাগুলো অঙ্কুরিত হতে থাকে। জুনিয়র প্রোগ্রামার হিসেবে যোগ দেন বুয়েটের ছাত্র অভিক চৌধুরী ও আবদুল জাওয়াদ। এপ্রিলে বুয়েটের আরেক ছাত্র রেহাব উদ্দিন আসার পর ত্রিমাত্রিক (থ্রিডি) গ্রাফিকস আরেকটু সমৃদ্ধ হয়। সেপ্টেম্বরে রকিবুল আলম যোগ দেওয়ার পর শিল্পীদের দল নতুন করে প্রেরণা পায়। রাকিবুল পড়তেন বুয়েটের স্থাপত্য বিভাগে। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকানো নয়। সবার চেষ্টায় ১৬ ডিসেম্বরেই প্রকাশ পায় ‘হিরোস অব ৭১’। গেমের মূল কাহিনি লিখেছেন ওমর রশীদ চৌধুরী, আবহসংগীত ও শব্দসংযোজন করেছেন তপেশ চক্রবর্তী। বিপণন ও প্রচারণা দেখছেন প্রিয়ম মজুমদার ও হাসান আল রাজি। গুগল প্লে স্টোরে ছাড়ার পর ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৯১ হাজার বার নামানো হয়েছে গেমটি!
এগিয়ে চলা
বাধা বিপত্তিও নেহাত কম আসেনি। অর্থের সংকুলান নিয়ে দুশ্চিন্তা সবসময়ই ছিল। গেমের ভবিষ্যৎ নিয়ে কখনও কখনও উঁকি দিয়েছে সংশয়ের রেখা। একটা সময় তো সবাই একটু হতাশ হয়েই পড়েছিলেন। কিন্তু রকিবুলের অনুপ্রেরণায় সবাই আবার উদ্যম ফিরে পান। গেমটা প্রকাশিত হওয়ার দুই দিন আগে আবার নতুন একটা ধাক্কা। গেমে একটা গুরুতর ত্রুটি ধরা পড়ে। যেসব পাকিস্তানি সেনাদের মারতে হবে তারাই অদৃশ্য হয়ে যাচ্ছে! সবাই মিলে সেটাও ঠিক করেন। যথাসময়েই তাই আলোর মুখ দেখে গেমটি।
গেমটি শেষ করতে ১৬টি ধাপ বা লেভেল পার হতে হয়, সেটি হয়তো একটু কঠিন ঠেকতে পারে। তবে গেম উন্নয়নের প্রধান সমন্বয়ক মাশা জানাচ্ছেন, ইচ্ছা করেই একটু কঠিন করা হয়েছে। তাঁর ভাষায়, ‘মুক্তিযুদ্ধ তো আসলে সহজ ছিল না। আমরা সেভাবেই ব্যাপারটা দেখাতে চেয়েছি।’ গেম একবার শুরু করলে সেখান থেকে বের হয়ে যাওয়ারও কোনো সুযোগ নেই। সেটাও তাঁদের পরিকল্পনা অনুযায়ী করা হয়েছে।
মাশারাও একটা স্বপ্ন লালন করছেন—মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বড় পরিসরে কিছু করতে চান তার। আগামী ২৬ মার্চ আরেকটি উন্নত সংস্করণ বের করার কথাও জানালেন তাঁরা। ৮৪ মেগাবাইটের হিরোস অব ৭১ নামানোর ঠিকানা:https://goo.gl/LVuIlm
বাধা বিপত্তিও নেহাত কম আসেনি। অর্থের সংকুলান নিয়ে দুশ্চিন্তা সবসময়ই ছিল। গেমের ভবিষ্যৎ নিয়ে কখনও কখনও উঁকি দিয়েছে সংশয়ের রেখা। একটা সময় তো সবাই একটু হতাশ হয়েই পড়েছিলেন। কিন্তু রকিবুলের অনুপ্রেরণায় সবাই আবার উদ্যম ফিরে পান। গেমটা প্রকাশিত হওয়ার দুই দিন আগে আবার নতুন একটা ধাক্কা। গেমে একটা গুরুতর ত্রুটি ধরা পড়ে। যেসব পাকিস্তানি সেনাদের মারতে হবে তারাই অদৃশ্য হয়ে যাচ্ছে! সবাই মিলে সেটাও ঠিক করেন। যথাসময়েই তাই আলোর মুখ দেখে গেমটি।
গেমটি শেষ করতে ১৬টি ধাপ বা লেভেল পার হতে হয়, সেটি হয়তো একটু কঠিন ঠেকতে পারে। তবে গেম উন্নয়নের প্রধান সমন্বয়ক মাশা জানাচ্ছেন, ইচ্ছা করেই একটু কঠিন করা হয়েছে। তাঁর ভাষায়, ‘মুক্তিযুদ্ধ তো আসলে সহজ ছিল না। আমরা সেভাবেই ব্যাপারটা দেখাতে চেয়েছি।’ গেম একবার শুরু করলে সেখান থেকে বের হয়ে যাওয়ারও কোনো সুযোগ নেই। সেটাও তাঁদের পরিকল্পনা অনুযায়ী করা হয়েছে।
মাশারাও একটা স্বপ্ন লালন করছেন—মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বড় পরিসরে কিছু করতে চান তার। আগামী ২৬ মার্চ আরেকটি উন্নত সংস্করণ বের করার কথাও জানালেন তাঁরা। ৮৪ মেগাবাইটের হিরোস অব ৭১ নামানোর ঠিকানা:https://goo.gl/LVuIlm